ভোট ডাকাতির আয়োজক ও আর্থিক দুর্নীতিগ্রস্ত এই নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করে তাহলে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে অবিলম্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বরখাস্ত করুন।
আজ (০৬ জানুয়ারি) বুধবার বেলা ১২টায় নির্বাচন কমিশনের আগারগাঁওস্থ প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের সভাপতিত্বে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বাম জোটের সমন্বয়ক ক্বাফি রতন বলেন, “এ নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়নি। তারা নানা রকম অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ ও নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে যা ইতোমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে”।
তিনি আরও বলেন, “এই কমিশন নৈতিকভাবে স্খলিত। এরা ইতোমধ্যে অবাধ নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এরা ক্ষমতাসীনদের হয়ে ভোট ডাকাতির নির্বাচন আয়োজন করেছে। এই নির্বাচন কমিশনের আর কোন নির্বাচন পরিচালনার বৈধ নৈতিক কর্তৃত্ব অবশিষ্ট নাই”।
উক্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, বাসদ (মার্কসবাদী)’র আ ক ম জহিরুল ইসলাম, ইউসিএলবি’র নেতা নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি’র কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের ভোট রাতে করা এবং সেই ভোটকে বৈধতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন তার সকল ধরণের বিশ্বাসযোগ্য̈তা ও বৈধতা হারিয়েছে। ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি বাম গণতান্ত্রিক জোটের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর গণশুনানিতে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজক এ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু পদত্যাগ না করে তারা ক্ষমতাসীন সরকারের নির্দেশে পাতানো নির্বাচন আয়োজন করে চলেছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনাররা বক্তৃতা না দিয়ে বক্তা হিসেবে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন যা গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি। একজন নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনেছেন। ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে আগারগাঁওয়ে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের সামনে বেলা ১১টা থেকে বাম জোটের নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়। এখান থেকে মিছিল নিয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ভবনের দিকে রওনা হন তারা। পথে পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনে মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ।
সেখানে বাম জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরে সেখানেই তারা সমাবেশ করে।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, ডিএমপির অনুমতি না থাকায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয় পর্যন্ত মিছিল যেতে দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জেলায় একই দাবিতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় বলে জানা যায়।