বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসাথে ভাস্কর্য বিরোধিতার আড়ালে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাত করতে চায়, তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করারও দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম আজ (২ ডিসেম্বর) বুধবার এক যুক্ত বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে জনগণকে সকল ধরণের প্রতিক্রিয়াশীল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ শক্তিকে প্রতিরোধ, পরাজিত করার লড়াই এবং ভাত-ভোট ও গণতন্ত্রের লড়াই জোরদার করতে দেশপ্রেমিক, প্রগতিশীল গনতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মাহুতি ও দুই লক্ষ মা বোনের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশ হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে ঘোষিত হয়। কিন্তু গণ-মানুষের সেই বিজয় ছিনতাই হয়ে যায়। ১৯৭৫ এর নির্মম রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরাজিত পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শ, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ধারা পুনরায় পুনর্বাসিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী, বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ একই ধারায় দেশ পরিচালনা করছে। দেশে ধন বৈষম্য, শ্রেনী বৈষম্য পর্বত প্রমাণ। ২২ পরিবারের জায়গায় হাজার হাজার কোটিপতির জন্ম হয়েছে। খুন, দুর্নীতি,মাদক, ধর্ষন, ও সন্ত্রাস মহামারী রূপ নিয়েছে। বেকার, বিশেষ করে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা সীমাহীন। মানুষের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও খাদ্যের নিরাপত্তা নাই। ভোট ও গণতন্ত্র নির্বাসনে। সাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ধর্মান্ধ শক্তির হুমকি ও আস্ফালন অব্যাহত আছে। তাদের সাথে সরকারের আপোষ ও তোষণ নীতির কারণে এদের সাহস ও উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের দ্বিমুখী আচরণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হুমকিগ্রস্থ করেছে।