২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশনসের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ১১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আজ তাজরীন ট্র্যাজেডির ৮ম বার্ষিকী।
তাজরীন ট্র্যাজেডির ৮ম বার্ষিকীতে তিন দফা দাবিতে আজ (২৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে ৬৮ দিন ধরে অবস্থানরত তাজরীনের আহত পঙ্গু শ্রমিকদের গণভবন অভিমুখে ‘জিন্দা লাশ’ মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি গণভবনের দিকে যাত্রা শুরু করলে কদম ফোয়ারার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়। পুলিশি বাধার মুখে রাস্তায় শুয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা।
পরে তাদের মধ্য থেকে পাঁচ জন প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যান।
তাজরীনের শ্রমিক জরিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট টিইউসি’র সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদারসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ দাফনের কাপড় পরিহিত শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশের বাধার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে জলি তালুকদার বলেন, ৬৮ দিন ধরে অবস্থানরত তাজরীন শ্রমিকদের দাবির প্রতি সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি। অন্যদিকে তাজরীনের খুনি মালিককে সরকার নানানভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের এই অন্যায় আচরণ কোনোভাবেই মনে নেয়া যায় না। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে রানা প্লাজা ও তাজরীনের শ্রমিকদের জন্য
ক্ষতিপূরণ বাবদ ১২২ কোটি টাকার মধ্য থেকে তাজরীনের আন্দোলনরত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের এইদিনে সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন অন্তত ১১২ জন শ্রমিক। আহত হন আরও অনেকে। সেদিনের আগুনের লেলিহান শিখা আজও ভয়াবহ হয়ে চোখে ফেরে ভুক্তভোগী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কাছে।
সেদিনের আহত শ্রমিকরা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই ক্ষত। নিদারুণ কষ্টে আছে ভুক্তভোগীদের পরিবার।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণের ধারাটি পরিবর্তন সাপেক্ষে অতিসত্বর ক্ষতিপূরণ, স্থায়ী পুনর্বাসন এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিসা- এই ৩ দফা দাবিতে তাজরীন অগ্নিকান্ডে আহত শ্রমিকরা বিগত ৬৮ দিন ধরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায় না হওয়ায় আজকে তারা ‘জিন্দা লাশ’ মিছিলের কর্মসূচি পালন করে।