স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের রাজশাহীর অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাজশাহী জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাবীবুজ্জামান চুনীর অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাজশাহী জেলা ও মহানগরের সাবেক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে হাবীবুজ্জামান চুনী ৫ জুলাই ম্যাসিভ হার্ট এ্যাটাক করে কানাডায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১৭ জুলাই তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
তার মৃত্যুতে রাজশাহী জেলা ও মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতৃবৃন্দ শোক বার্তায় বলেন, চুনী শুধুমাত্র আসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল সমাজ সচেতন মানুষই ছিলেন না তিনি তার সময়ের একজন অবিসংবাদিত সংগঠক ছিলেন । তিনি স্বপ্ন দেখতেন দিন বদলের ও শোষনহীন সমাজের এবং অসংখ্য তরুনকে সবপ্ন দেখাতেন। তিনি ছিলেন আজন্ম যোদ্ধা। ছোট থেকেই আসম্ভব সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা শোষণহীন সমাজের একজন অদম্য মানুষকে হারালাম।
হাবিবুজ্জামান চুনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন আহুত এসএসসি ক্যাম্পে অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে তার রাজনীতির পথচলা শুরু।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যক্তিজীবনে চুনী ছিলেন বন্ধু বৎসল, সদালাপী। তারুণ্যের প্রতীক চুনীর কাছে সবার অবাধ যোগাযোগ ছিল। চুনী ছিল ছোটবড় সকলের অজস্র প্রশ্ন আর অন্তহীন কৌতুহলে আলোচনার সঙ্গী। রাজশাহীতে কমিউনিস্ট পার্টি আর ছাত্র ইউনিয়নের সেই যুগের অন্যতম খুঁটি ছিলেন হাবীবুজ্জামান চুনী। আশির দশকের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তার সার্বক্ষনিক লড়াকু যোদ্ধা, মৃদু হাসিমাখা মুখের মানুষ ছিলেন তিনি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, হাবীবুজ্জামান চুনী খুব ভালো ভাবে তার কর্মীদের বোঝাতেন সংগঠন কি, কেন প্রয়োজন, নেতৃত্ব নেতার গুরুত্ব এইসব ,ছিল চিরদিনের ইন্টেলেকচুয়াল । তিনি পরিকল্পনাগুলো এমন ভাবে উপস্থাপন করতেন, যা সবসময় বিশ্বাস্য ছিল। উনি যখন যেখানে থেকেছেন সেখানেই ছাত্র ইউনিয়নের পাশে থেকেছেন, বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন সংগঠনকে।
ব্যক্তি জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়েনের নেত্রী জোবাইদা জামান শিখার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। মৃত্যুকালে তিনি এক স্ত্রী, এক কন্য ও এক পুত্র সন্তানকে রেখে যান। তার মৃত্যুতে ছাত্র আন্দোলনের এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো।
নেতৃবন্দ হাবীবুজ্জামান চুনীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি,সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ওয়াহিদা মল্লিক জলি, আজম মাসুদ, মনিরুজ্জামান, শরীফুল ইসলাম বাবু, শহীদুল ইসলাম, মাহফিজুর রহমান রনি, শ্যামল কুমার ঘোষ, মাহফুজুল ইসলাম লিটন, দেবব্রত সরকার তপন, গৌতম লাহিড়ি, শফিকুল ইসলাম শিবলী, এহসানুল আমিন ইমন, হাফিজ উদ্দিন পিন্টু, দেবাশীষ সাহা, হিরো চৌধুরী, শাহজাহান আলী পিয়াস, সোহেল আকতার সুইট,উজ্বল ঘোষ, অজিত কুমার ঘোষ, অমিতাভ ভট্টাচার্য, এস এম তারিক আমিন সঙ্গী, দীনেশ প্রমাণিক, পাপেল আহমেদ, সুদীপ্ত রায় চৌধুরী, মনিরুজ্জামান মানিক, ফেরদৌস আহমেদ উজ্বল, কামরুজ্জামান রানা, ওয়ালিদ আদনান নাহিদ, মাহফুজুর রহমান ডন প্রমূখ।