মতাদর্শগত বিরোধের জের ধরে অবশেষে ভেঙে গেলো আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
বহুধাবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর ঐক্যের মাধ্যমে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণার মধ্য দিয়ে যশোরে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মতাদশ সমন্বয় কমিটির জাতীয় সম্মেলন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টায় যশোর টাউন হল ময়দানের অস্থায়ী অমল সেন মঞ্চে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বৃটিশ-ভারতের সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার স্বেচ্ছাসেবক কমরেড নারায়ন চন্দ্র বসু।
আর এই ভাঙনের সময় যশোরে ওয়ার্কার্স পার্টির নতুন এই অংশের সম্মেলন ও আত্মপ্রকাশ-মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিবিসহ কয়েকটি বাম দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সমাবেশে সম্মেলনের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন মতাদর্শ রক্ষা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ।

তিনি বলেন, ৪৭ বছরের লুটেরা বুর্জোয়া শ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, দুর্নীতি, গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে তারা জনগণের আস্থা হারিয়েছে।
শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষ বিকল্প নেতৃত্ব চান। বর্তমান বাস্তবতা বলছে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলা ছাড়া জনগণের মুক্তি নেই। এই মুহূর্তে বামগণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলাই জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য। ২০২০ সালে উপমহাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্ণ হতে চলেছে। এ সময়ে আমরা দেশের বহুধাবিভক্ত পার্টিগুলোর ঐক্য চাই। লক্ষ্য যখন এক, এক পতাকাতলে আসার সকল বাধা আমরা অতিক্রম করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ শ্রেণি গণআন্দোলনের মাধ্যমে ঐক্য অর্জন করবোই-এই সম্মেলনে আমরা সেই প্রত্যয় ঘোষণা করছি।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড নুরুল হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন, দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড বিমল বিশ্বাস, কমরেড মনোজ সাহা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশারফ হোসেন নান্নু, ঐক্য ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড লিয়াকত আলী।
সম্মেলনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এই সম্মেলনকে ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে ঐক্যের ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার আহবান জানান।
কমরেড সাইফুল হক বলেন, কমিউনিস্ট ঐক্য আর দুরে নয়।
কমরেড মোশারফ হোসেন নান্নু কমিউনিস্ট ঐক্যকে আরে সুদৃঢ় করার আহবান জানান।
এর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে জাতীয় সংগীত ও কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন হয়।

সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ডেলিগেটসহ পার্টি সদস্যরা কাস্তে-হাতুড়িখচিত হাজার হাজার লাল পতাকার মিছিল নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। সম্মেলন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ কমরেড আসাদ, তোজো, শান্তি, মানিক ও ফজলু এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহিদ কমরেড গোলাম মাজেদ স্মরণে পৃথক দু’টি তোরণ নির্মাণ করা হয়।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।