উন্নয়নের নামে লুটপাট-দুর্নীতির মহোৎসব চলছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃবৃন্দ। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে একথা বলেন নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গরিবদের ভাগ্যের উন্নয়ন না করে লুটেরাদের পকেট ভরার মধ্য দিয়েই চলছে সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড। লুটপাটের ধারাবাহিকতায় বালিশ কেনা, পর্দা কেনার দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্রামীণ গরিব মানুষের জন্য সরাসরি নানা কর্মসূচি ও প্রকল্পের যে বরাদ্দ থাকে তার সিংহভাগই লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন আওয়াজ তুলতে হবে, ‘বরাদ্দ চোরদের রুখে দাঁড়াও- বরাদ্দ চোরের চামড়া, তুলে নাও’। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ গরিব মানুষকেই ঘরে তুলতে হবে।
সামাবেশে বক্তারা আরও বলেন, গ্রামে সারা বছর কাজ না থাকলেও সরকার এসব গ্রামীণ সর্বহারা শ্রেণির ব্যাপারে নিবির্কার। কর্মহীন সময়ে গ্রামের এই বঞ্চিত মানুষগুলো বেঁচে থাকার আশায় শহরে ছুটে যায়। কিন্তু সেখানে অমানবিক জীবনযাপন তাঁদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলে। বক্তারা বলেন, হাওরাঞ্চলের গরিব মানুষসহ দেশের বেশিরভাগ গ্রামের মানুষ ঋণের জালে জর্জরিত। বক্তাগণ অবিলম্বে খাইখালাসি ধরনের আইন করে এনজিও ঋণের অত্যাচার বন্ধের দাবি জানান। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ক্ষেতমজুররা যখন বয়স্ক হয়ে যায় তখন আর তারা পরিশ্রম করতে পারে না, ফলে তাঁদের ঐ সময় না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মরতে হয়। সরকারের পক্ষ যে যৎসমান্য বয়ষ্ক ভাতা দেওয়া হয় তা প্রকৃত গরিব বয়ষ্করা পায় না। সেখানেও চলে স্বজনপ্রীতি, লুটপাট। বক্তারা এই ষাটোর্ধ্ব বয়স্কদের জন্য বেঁচে থাকার মতো পেনশন দেওয়ার দাবি করেন।

গ্রামীণ মানুরদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, লড়াই ছাড়া-সংগ্রাম ছাড়া অধিকার আদায় হবে না। তার জন্য জেলা- উপজেলায়-ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃত্বে আন্দোল গড়ে তুলতে হবে।
ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি অ্যাড. সোহেল আহমেদ-এর সভাপতিত্বে এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার বাপ্পীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান, আব্দুল মালেক শিকদার, সদস্য অ্যাড. এনামুল হক। উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি শামছুজ্জামান সেলিম, সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমদ, মৃন্বয় ম-ল, পরেশ কর, অ্যাড. চিত্ত গোলদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, মোতালেব হোসেন, আরিফুল ইসলাম নাদিমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।