হা-মীমের গুলিবিদ্ধ শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি
টঙ্গীর হা-মীম গ্রুপের কারখানায় পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুরুতর আহত শ্রমিক কাঞ্চন মিয়াসহ সকলের সুচিকিৎসা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (২৮ মে) শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ থেকে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বাঁশখালীসহ সকল শ্রমিক হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ-এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম বাবুল, লুৎফর রহমান আকাশ প্রমুখ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কাঞ্চন মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও পুত্র মুত্তাকিন।
সমাবেশে বক্তারা ঈদের আগে টঙ্গীর হা-মীম গ্রুপে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শ্রমিকের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় অদ্যবধি দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, একজন গুলিবিদ্ধ শ্রমিক কাঞ্চন মিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। সরকার তার জন্য মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকার সহায়তা দেয়ার মধ্য দিয়ে তার দায়িত্ব শেষ করেছে।
বক্তারা বলেন, পাওনা ছুটির দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গী মিল গেটে অবস্থিত হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট গার্মেন্ট লি. ও ক্রিয়েটিভ কালেকশনস লি. কারখানা দু’টির শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গত ১০ মে পুলিশ গুলি চালায়। এঘটনায় অন্তত পনেরজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, খুব কাছে থেকে শ্রমিকদের গায়ে শর্টগান দিয়ে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিক কাঞ্চন মিয়ার শরীর থেকে চিকিৎসকরা শিশার প্যালেট গুলি উদ্ধার করেছে। তারা বলেন, কথায় কথায় শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর উপযুক্ত জবাব না দেয়ার ফলেই রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো একের পর এক ঘটনায় এমন ঔদ্ধত্য দেখিয়ে যাচ্ছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, কারখানা মালিকের পুত্রসহ যাদের নির্দেশে শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা বলেন, আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসারত কাঞ্চন মিয়াসহ আহত সকল শ্রমিকের সুচিকিৎসার ব্যয়ভার মালিক ও সরকারকে বহন করতে হবে। তারা আরো বলেন, চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করা কাঞ্চন মিয়াসহ স্থায়ী অক্ষম হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন অনুসারে সারা জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার গুরুত্বপুর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে।