শ্রীলঙ্কা: বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্টের পলায়ন, জরুরি অবস্থা জারি
শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে। একইসাথে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জরুরি অবস্থা জারির পাশাপাশি দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার রাতে দেশ ছেড়ে পালান গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি একটি সামরিক উড়োজাহাজে করে মালদ্বীপে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। গোতাবায়ার দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলে প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব সামলান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংঘে এখন একেবারেই জনপ্রিয় নন। তার বাড়িতে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। তিনি নিজেই বলেছেন, সর্বদলীয় জাতীয় সরকার হলে তিনি ইস্তফা দেবেন।
এই অবস্থায় দলগুলি একজোট হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারে। কিন্তু তারা এখনো মতৈক্যে পৌঁছতে পারেনি। এই অবস্থায় পার্লামেন্টের স্পিকার কার্যকরি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাকে মানবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, তিনি রাজাপাকসের শরিক দলের নেতা।
শ্রীলঙ্কার মানুষ এখন রাজনীতিবিদদের উপর প্রবল ক্ষুব্ধ। তারা মনে করছেন, রাজনীতিকদের জন্যই এই আর্থিক সংকটে পড়েছে দেশ।
শ্রীলঙ্কার স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে বলেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে তাঁকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিতে। সংবিধানের ৩৭ ধারার ১ অনুচ্ছেদের আওতায় এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গণ–আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। তাঁরা গোতাবায়া ও রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, স্পিকারের এ ঘোষণার পর বিক্ষোভকারীরা কী প্রতিক্রিয়া দেখান।
উচ্ছৃঙ্খল আচরণে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার জন্য দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কা অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সংকটের প্রেক্ষাপটে গত মার্চ মাসে দেশটির হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। তাঁরা লাগাতার বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন।