অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন
আমাদের ৭ জন কমরেড জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ছাত্র ইউনিয়ন নেতা নজির আমিন চৌধুরী জয়, তামজীদ হায়দার চঞ্চল, জয়তি চক্রবর্তী, নাজিফা জান্নাত, তানজিম রাফি, আকিফ আহমেদ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নেতা আরাফাত সাদ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন তাঁরা। সেই মিছিলে হামলা করে পুলিশ তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং আরো অনেককে আহত করেছিল।
এখনো মুক্তি পাননি খুলনার শ্রমিকনেতা রুহুল আমিন। তিনি মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়েছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারকৃত অনেকে এখনো কারাগারে আছেন। এখনো মুক্তি পাননি নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া হকার্স ইউনিয়নের ৩ জন নেতা।
লেখক মুশতাক আহমেদের কথায় আসা যাক। গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে প্রায় ৯ মাস আটক থাকার পর অবশেষে তিনি ‘মুক্তি’ পেয়েছেন! আমরা দাবি করেছিলাম কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি, কিন্তু সরকার পৃথিবী থেকেই তাঁর ‘মুক্তি’র ব্যবস্থা করে দিয়েছে। কারাগারের মধ্যেই ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত বছরের ৬ মে র্যাবের সদস্যরা লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে র্যাব। এই মামলায় আসামি করা হয় ১১ জনকে। কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, ‘রাষ্ট্রচিন্তা’র সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁঁইয়া, মিনহাজ মান্নানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দিদারুল ইসলাম ভূঁঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান। মুশতাকের মৃত্যুর পর ৩ মার্চ কিশোরের জামিন হয়। অনেকেই বলছেন, মুশতাকের মৃত্যুর বিনিময়ে কিশোরের জামিন হয়েছে। কারণ, মুশতাকের মৃত্যুর পর সরকার চাপে পড়ে যায়। তাই কিশোরকে আটকে রাখার ঝুঁকি সরকার আর নিতে চায়নি।
গ্রেপ্তারের পর কিশোরকে যে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে, তার বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। অজ্ঞাত স্থানে ৬৯ ঘণ্টা রেখে দফায় দফায় তাঁকে নির্যাতন করা হয়। এখন হাঁটতে পারছেন না তিনি। দুই পায়ে কালশিটে পড়েছে। ডান কানে শুনতে পারছেন না, কান দিয়ে পুঁজ পড়ছে। নির্মম নির্যাতনের কথা বেরিয়ে এসেছে তাঁর বর্ণনায়। কিশোর বলেছেন, মুশতাককে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিল বলে মুশতাক জানিয়েছিলেন তাঁকে।
একদিকে মুশতাকরা কারাগারে মরছে। অন্যদিকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা একের পর এক খালাস পেয়ে যাচ্ছে। খুনের আসামি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। লুটেরারা বিনা বাধায় লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। লেখক মুশতাকের জামিনের আবেদন আদালতে নাকচ হয়েছে ছয় বার। কী তাঁর অপরাধ? তিনি লেখালেখি করতেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মতপ্রকাশে সক্রিয় ছিলেন। গণতন্ত্রহীন দেশে এটা আসলেই অনেক বড় অপরাধ!
মুশতাকের মৃত্যুর দায় রাষ্ট্র, সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে মনগড়া ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে’র কথা বলছে। সরকারের সমালোচনার পথ রুদ্ধ করতে গিয়ে সংবিধানের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে, সরকার মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার টুঁটি চেপে ধরেছে।
মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। শুধু মতপ্রকাশের অধিকারকেই খর্ব করা নয়, আইনটি এখন নিপীড়নের অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। পাশ হওয়ার আগে থেকেই বামপন্থিরা আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছেন। প্রতিবাদ করছেন প্রগতিশীল লেখক-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকরা। প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য-আশঙ্কাকে সরকার সত্য বলে প্রমাণ করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার দুই বছরের মধ্যে এ আইনে মামলার সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। মূলত রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং মানহানির অভিযোগে মামলাগুলো হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত বছর সারা দেশে ৭৩২টি মামলায় ১ হাজার ১৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দুই (জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) মাসে ১৬৫ মামলায় ৩৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অন্তত ৫০টি। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৭ জন সাংবাদিককে।
কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশবাসীকে একটা বার্তা দিচ্ছে। বার্তাটা হচ্ছে, সরকারের সমালোচনা করা যাবে না। লাগামহীন দুর্নীতি, লুটপাট, নিপীড়ন চলবে, কিন্তু সেসবের বিরুদ্ধে বলা যাবে না! সরকার মানুষকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, সরকারের সমালোচনা করলে পরিণতি লেখক মুশতাকের মতো হতে পারে।
নড়াইলের লোককবি গুরুপদ গুপ্ত বর্তমান দমবন্ধ করা সময়টাকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এভাবে—“ও মানুষ, মানুষ, দুডো চোক আর দুডো কান, দেকপা আর শুনবা, কিন্তু এট্টা মুক তো, কথা কম কবা”। বর্তমান বাস্তবতায় অনেক প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের বাস্তবতায় লেখা কবি আবু সালেহ্’র বিখ্যাত কবিতাটা—“ধরা যাবে না ছোঁয়া যাবে না বলা যাবে না কথা/ রক্ত দিয়ে পেলাম শালার আজব স্বাধীনতা”।
জনসমর্থনহীন বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করা, নিপীড়ন করার প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করছে। বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতির দিকে তাকালেই এর সত্যতা ফুটে ওঠে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের যে চিত্র দেখা যায়, তা এক কথায় ভয়াবহ। করোনাকালে মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করাসহ দমন-পীড়ন আরো বেড়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি আগের চেয়ে বেশি উদ্বেগজনক ছিল বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নামে হত্যাকাণ্ড, থানা ও কারা হেফাজতে মৃত্যু ও পুলিশি নির্যাতন, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, যৌন নির্যাতন ও হত্যার মতো ঘটনা বরং ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। নির্বাচনী সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা ও নির্যাতন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গ্রেপ্তার রাষ্ট্র কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন করার ঘটনাও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে। করোনা মহামারির কারণে সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকা এবং সুুরক্ষা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নজরদারি জোরদার থাকা সত্ত্বেও, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়া গভীর উদ্বেগজনক।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ২০২০ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে। সংস্থাটির ২০২০ সালের মানবাধিকার পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার মধ্যেও গত বছর বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কথিত ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১৮৮ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন ১১ জন। গ্রেপ্তারের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে ৫ জন এবং গুলিতে মারা গেছেন ৮ জন। কারাগারে মারা গেছেন ৭৫ জন। ৬ জন গুম হয়েছেন। এসব কেবল পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে করা পরিসংখ্যান। প্রকৃত সংখ্যা আরো ভয়াবহ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ওয়ার্কিং গ্রুপের এক বৈঠকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘গুম’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আগামী জুন মাসে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন জমা দেবে ওয়ার্কিং গ্রুপ। সেই লক্ষ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, বাংলাদেশে গুম সম্পর্কে ওয়ার্কিং গ্রুপ নিয়মিত অভিযোগ পাচ্ছে। এসব অভিযোগ পর্যালোচনায় গুমের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দৃশ্যত দায়মুক্তির অব্যাহত চর্চায় ওয়ার্কিং গ্রুপ উদ্বিগ্ন।
২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গুমবিরোধী ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রোটেকশন ফর অল পারসন্স অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স’ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত এতে স্বাক্ষর করেনি। দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট বলছে, বৈশি^ক আইনের শাসন সূচকে গত বছরের তুলনায় ৩ ধাপ পিছিয়ে ১১৫তম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চায় পশ্চিমারা। বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ সহকারে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে ইউরোপের ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সুশাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, দায়মুক্তি ও অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াইবিষয়ক অনুচ্ছেদে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউজ’-এর বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে নাগরিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চা একদমই কম। গত পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে নাগরিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার সবচেয়ে অবনতি হয়েছে বলে সংস্থাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘আংশিক স্বাধীন’ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে ‘স্বাধীন নয়’, ‘আংশিক স্বাধীন’ ও ‘স্বাধীন’ এই তিন ভাগে দেশগুলোকে ভাগ করা হয়েছে। ২০২১ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে যেসব দেশের স্কোর গড়ে ১ থেকে ৩৪-এর মধ্যে সেসব দেশকে ‘স্বাধীন নয়’, স্কোর ৩৫ থেকে ৭১ হলে সেসব দেশকে ‘আংশিক স্বাধীন’ এবং স্কোর ৭২-এর বেশি হলে সেসব দেশকে ‘স্বাধীন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদনে রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা—এই দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক প্লুরালিজম বা বহুত্ববাদ ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ, সরকারের কার্যকারিতা, নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থা, ক্ষমতার ব্যবহার ও স্বচ্ছতা সম্পর্কিত নানা বিষয়। অন্যদিকে নাগরিক স্বাধীনতার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিশ্বাস, মানবাধিকার সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা, আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থা, ব্যক্তি স্বাধীনতা। এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সংস্থাটির প্রতিবেদনে মূল্যায়ন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশ ১০০ নম্বরের মধ্যে ৩৯ পেয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অধিকারে ৪০ নম্বরের মধ্যে ১৫ এবং নাগরিক স্বাধীনতায় ৬০ নম্বরের মধ্যে ২৪ পেয়েছে।
নিপীড়ন এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। দেশে নারী নির্যাতন বাড়ছে। বাড়ছে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন। গণতন্ত্রহীনতার সুযোগে বাড়ছে সামাজিক নিপীড়ন। কয়েকদিন আগে মাদ্রাসায় এক শিশুছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। এর আগে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে লালমনিরহাটে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে একজন মানুষকে মেরে ফেলার ঘটনা এখনো মানুষ ভুলে যায়নি।
নিপীড়নের এই সময়ে কিছু ঘটনা, কিছু কথা আমাদের উদ্দীপ্ত করে। প্রতিবাদী মিছিল থেকে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জয়িতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর মা কমরেড মমতা চক্রবর্তী বলেন, “ওর বাবাও অনেক জেল খেটেছেন, এসব নিয়ে টেনশন করি না। ভয় পেলে আন্দোলন করবে কেমন করে?”
সরকার ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ভয়কে জয় করতে হবে। নিপীড়ন যত তীব্র হবে, আন্দোলনও তত তীব্র করতে হবে। নিপীড়নের জবাব আন্দোলনে।