ওপেক্স-সিনহা গার্মেন্টস বন্ধের প্রতিবাদে নারায়নগঞ্জে বিক্ষোভ
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তৈরি পোশাক কমপ্লেক্স হিসাবে পরিচিত ওপেক্স গ্রুপের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরের সিনহা গার্মেন্টসের কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে কারখানার শ্রমিকরা।
কাঁচপুর সিনহা গার্মেন্টস বন্ধ কেন এর জবাব চেয়ে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছে শ্রমিকরা।
আজ (২৮ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার এসকল দাবি-দাওয়া নিয়ে ওপেক্স গ্রুপ সিনহা গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী অধিকার আদায় কমিটি নারায়নগঞ্জের ডিসি অফিস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে শ্রমিকরা মিছিল করে নারায়নগঞ্জের চাষাড়ায় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত করে।
গত ১৮ অক্টোবর একটি নোটিশে সেখানে থাকা সবগুলো কারখানা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই শ্রমিকরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ এ স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে এই কারখানা কমপ্লেক্সটিকে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম কমপ্লেক্স বলা হয়, যেখানে একসময় ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করত, যদিও গত কয়েক বছরে সেই সংখ্যা কমে এসেছে।
ওপেক্স অ্যান্ড সিনহা টেক্সটাইল গ্রুপের পক্ষ থেকে ১৮ অক্টোবর কারখানা বন্ধের যে নোটিশ দেয়া হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে: ”ওপেক্স গ্রুপের স্বত্বাধিকারী গত ২০১২ সাল থেকে সমস্ত গার্মেন্টস কারখানায় আর্থিক ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও ঋণ করে এবং জমি জমা বিক্রি করে সকলের বেতন ভাতা ও অন্যান্য খরচ প্রদান করে কারখানাসমূহ চালু রেখেছিলেন।”
নোটিশে কারখানা বন্ধের কারণ দিয়ে আরও বল হয়: ”কিন্তু করোনা অতিমারি, অর্ডারের অভাব, শ্রমিক কর্মচারীগণ কর্তৃক বিশৃঙ্খলা, শ্রমিকদের কাজে অনীহা ও নিম্ন দক্ষতা এবং সময়ে সময়ে কারখানার কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার কারণে কারখানা খোলার সমস্ত পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং মালিকের আর্থিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটায়, বর্তমানে কারখানাসমুহ আর চালানো সম্ভব হচ্ছে না।”
ফলে ১৯ অক্টোবর ২০২১ সাল থেকে ওপেক্স গ্রুপ কাঁচপুর শাখার সকল গার্মেন্টস ইউনিট এবং ওয়াশ প্ল্যান্টসহ সকল ইউনিট স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে ওই নোটিশে।
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ১৯৮৪ সালে ৪৩ একর জমির ওপর এই গার্মেন্টস কমপ্লেক্সটি তৈরি করা হয়। এখানে আটটি কারখানা ছিল, যেসব প্রতিষ্ঠানে সুতা-কাপড় তৈরি থেকে শুরু করে ফিনিশিং প্রোডাক্ট তৈরির সমস্ত কিছুই করা হতো। এসব প্রতিষ্ঠানের টার্ন ওভার ছিল বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।
এই কারখানাগুলোয় বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে গত দুই বছর ধরে শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে।
সর্বশেষ এসব কারখানায় কাজ করতেন প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক।