সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে না বাম জোট
‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নির্মাণে জনগণের আস্থা অর্জন করতে না পারায় প্রহসনের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ’ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
বাম জোটসহ সকল বিরোধী দল বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে বলে জানিয়ে বাম নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রহসনের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হবে ফলে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কলংকজনক নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া কোন মতেই সমীচীন হবেনা বিধায় বাম জোট আসন্ন ৫ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একই সাথে দেশবাসীকে প্রহসনের সিটি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের উচ্ছেদ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধিনে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ ভোট, ভাত ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
২৭ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচাস্থ বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভায় এ-সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে বলে জানা যায়।
বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্ক্সবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সদস্য তাসলিমা আক্তার বিউটি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহীদুল ইসলাম সবুজ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
সভার প্রস্তাবে বলা হয় তথাকথিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে অনুগত নির্বাচন কমিশন নিয়োগের পর বহু বাগাড়ম্বর করলেও তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে উপর্যুপরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জনগণের আস্থা যে নির্বাচন কমিশন, ভোট ও সরকারের প্রতি নাই তার প্রমাণ ভোট কেন্দ্রে জনগণের অত্যন্ত কম উপস্থিতি।
বাম জোটের সভা থেকে আরও বলা হয়, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গণনার সময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে একটি টেলিফোন কল যাওয়ার পর ভোট গণনা কিছুক্ষণ স্থগিত রাখা ও ফলাফল পাল্টে যাওয়া নিয়ে জনমনে বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে ইভিএম মেশিন বুথের বাইরে নিয়ে যাওয়া, গাইবান্ধা উপনির্বাচনে বুথে ডাকাত চিহ্নিত করার পর ভোট স্থগিত করা হলেও কাউকে বিচারের মুখে এনে শাস্তি দিতে না পারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উকিল সাত্তার মার্কা নির্বাচন ইত্যাদি প্রমাণ করে বর্তমান দলীয় সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন মোটেও অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়।